নূরে আলম জীবন
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, অতঃপর বাংলাদেশ, লাল সবুজের পতাকা, আমাদের স্বাধীনতা। দীর্ঘ ৫৩ বছরের রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সেনা সমর্থিত শাসন আবার ২০২৪ এর ৫ ই আগস্ট একটি স্বতঃস্ফূর্ত অভ্যুত্থান, যে অভ্যর্থনের অন্তরালে ছিল দীর্ঘ সময়ের শাসন ব্যবস্থা থেকে মুক্তি, একটি পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশের প্রত্যাশা, হয়তো ভালো কিছু হবে। অসহায় পিতা ভেবেছিলেন বেকার ছেলেটি চাকরি পাবেন, সংসারের হাল ধরবেন। গরীব রিক্সা চালক স্বপ্ন দেখেছিলেন দ্রব্যমূল্য নাগালের ভেতর থাকবে পরিবারকে নিয়ে ডাল-ভাত খেয়ে একটু শান্তিতে বাঁচতে পারবেন।
এমনিভাবে সকলের চোখে নানাবিধ স্বপ্ন বিস্তার হয়েছিল, কথা বলার স্বাধীনতা, জীবনের নিরাপত্তা, নারীর অধিকার নিশ্চিত, দপ্তরে দপ্তরে ঘুষ, চিকিৎসা সেবায় কসাইদের হাত থেকে মুক্তি, গুম-খুনের আতঙ্ক থেকে রেহাই, শিক্ষা ব্যবস্থায় ভোগান্তি সহ মৌলিক সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পাবে বাংলাদেশ….
তবে বাস্তবিক অর্থে জুলাই বিপ্লবের পর ভালো আছে কি আমার সোনার বাংলাদেশ?
হ্যা কিছু পরিবর্তন দৃশ্যমান! যেমন ৭১ এর কথা বলা মানে স্বৈরাচারের পক্ষে অবস্থান নেয়া, মুক্তিযুদ্ধের মহান নায়ককে শ্রদ্ধা বা স্বরণ করা মানে আওয়ামী লীগের দোসর হওয়া বা আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলো বলে মবের শিকার হওয়া এ পরিবর্তন গুলো দৃশ্যমান।
এখন কথা হচ্ছে যে দলটি দৃশ্যমান কোনো কর্মসূচিতে নেই, যাদের সভানেত্রী পালিয়ে গিয়েছেন। তাদের নিয়ে কেনো এ সরকারের বা বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলোর এতো আতঙ্ক। একটি রাজনৈতিক দলকে কেনো রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলা করতে ভয়? দেশে এতো রাজনৈতিক দল, এতো শক্তি তারপরও কেনো আওয়ামী লীগকে রাজপথে রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলা করতে অনিহা? তাহলে কি সত্যি আওয়ামী লীগ জনগণের দল? তাহলে কি আওয়ামী লীগকে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে?
এতো কিছুর পরও কি আওয়ামী লীগ ফিরতে পারবে? জনগণই সকল শক্তির উৎস। জনগণ চাইলে অবশ্যই পারবে। তবে জনগণের ভাষার প্রতিধ্বনি ভোটের ব্যালটে প্রকাশ হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগের রাজপথে ফিরতে হলে সাধারণ জনগণের আন্দোলনে ফিরতে হবে। হয়তো আজ বা কাল রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ প্রাসঙ্গিক হবে জনগণের মাধ্যমে। ফিরে আসা কি এতোটাই সহজ হবে? না, যদি এ সরকার ব্যর্থ হয় তাহলে আওয়ামী লীগকে ফেরাবে বা আওয়ামী লীগ ফিরবে।
![]()