• মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ০৬:৩১ অপরাহ্ন

বাংলাদেশের সাথে নাটকীয় জয় পেলো আরব আমিরাত

admin
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫

  • নিউজ ডেস্কঃ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ১ বল হাতে রেখেই ২ উইকেটের ব্যবধানে বাংলাদেশকে হারিয়ে দিয়েছে স্বাগতিক আরব আমিরাত। এই প্রথম দুইশ রানের লক্ষ‍্য দিয়ে হারল কোনো ম‍্যাচে বাংলাদেশ আর দুই দল মিলে টি-টুয়েন্টিতে তুলে ৪১১ রান।

সোমবার (১৯) দিবাগত রাতে শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শেষ ২ ওভারে আরব আমিরাতের প্রয়োজন ছিল ২৯ রান। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে ভুলটা করেন শরিফুল ইসলাম। ১৯তম ওভারে তিনি দেন ১৭ রান। ওভারের শেষ বলে গিয়ে ওভার থ্রোতে বাউন্ডারি হয়ে যায়। অহেতুক ৫টি রান দিয়ে টাইগারদের হারতে হয়।

যদিও, শেষ ওভারে আমিরাতের প্রয়োজন ১২ রান। তানজিম হাসান সাকিব প্রথমেই দেন ওয়াইড। পরের বলে ১ রান। এরপর খেলেন ছক্কা। ৪ বলে ৪ রান প্রয়োজন। তৃতীয় বলটিতে দারুণ ডেলিভারি দিলে বোল্ড হন ব্যাটার। ম্যাচ তখন জমে উঠে। তিন বলে চার রান দরকার। মাতিউল্লাহ ১ রান নিলেন। চাপের মুখে চতুর্থ বলটিকে নো করে বসলেন তানজিম।

এ সময় রান আউটেরও দারুণ সুযোগ ছিল। কিন্তু উইকেটরক্ষক জাকের আলির দুর্বল থ্রো এবং তানজিম সাকিবের তৎপরতার অভাবে রানআউট হয়নি। পরের বলে ২ রান নেন হায়দার আলি। রান আউটের এবারও দারুণ সুযোগ। কিন্তু তাওহিদ হৃদয় বলটা প্রথমে থ্রো করেননি। কিন্তু যখন থ্রো করলেন তখন দেরি হয়ে গেছে। প্রথমে থ্রো করলেও রান আউট হতো নিশ্চিত। ছোট ছোট এসব ভুলের কারণে ২০৫ রান করেও শেষ পর্যন্ত হেরে যায় বাংলাদেশ।

শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ২০৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে আরব আমিরাতের দুই ওপেনার মুহাম্মদ জোহাইব ও মোহাম্মদ ওয়াসিম মিলে ১০৭ রানের অনবদ্য এক জুটি গড়েই বাংলাদেশকে পেছনের পায়ে ঠেলে দেন। ১০.১ ওভারে তানভির ইসলাম যখন জুটি ভাঙেন তখন আরব আমিরাতের ব্যাটারদের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। ৩৪ বলে ৩৮ রান করে আউট হন মুহাম্মদ জোহাইব।

এরপর রাহুল চোপড়াকে রিশাদ হোসেন দ্রুত (২ রানে) ফিরিয়ে দিলে কিছুটা হলেও ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। দলীয় ১৪৮ রানের মাথায় বিপজ্জনক হয়ে ওঠা মোহাম্মদ ওয়াসিমের উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম। কিন্তু ততক্ষণে জয়ের কাজ করে দিয়ে গেছেন তিনি। ৪২ বলে খেলে গেছেন ৮২ রানের অনবদ্য ইনিংস। ৯টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৫টি ছক্কার মার মারেন তিনি।

এরপর থেকে নিয়মিত বিরতিতেই আরব আমিরাতের উইকেট নিতে থাকে বাংলাদেশের বোলাররা। আসিফ খান ১২ বলে ১৯ এবং আলিশান শরাফু ৯ বলে ১৩ রান করে কিছুটা চড়াও হতে চাইলেও নাহিদ রানা ও শরিফুল ইসলাম তাদেরকে বেশি এগুতে দেননি। এরপর আরিয়ানস শর্মা ৭ রানে আউট হলে বাংলাদেশ জয়ের কাছাকাছি চলে আসে। কিন্তু ধ্রুব পারাসার ১১ রান করে এবং হায়দার আলি ৬ বলে ১৫ রান করে শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশের হাত থেকে ম্যাচটা কেড়ে নেন।

এর আগে, টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০৫ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৯ রান করেন তানজিদ তামিম। পাওয়ার প্লেতে এদিন কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬৬ রান করে বাংলাদেশ। প্রায় এক বছর আর ১৪ ইনিংস পর টি-টোয়েন্টিতে উদ্বোধনী জুটিতে ফিফটি পায় দল।

পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই ব্যক্তিগত ফিফটি করেন তামিম। তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এমন কীর্তি গড়েন। ২৫ বলে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। তবে এর পর আর বেশি দূর এগোতে পারেননি। ৩৩ বলে ৫৯ রান করে ফিরে যান এই ওপেনার। তিনে নেমে দারুণ ব্যাটিং করেন শান্তও। তার স্ট্রাইকরেট নিয়ে বেশ সমালোচনা হলেও এদিন উইকেটে এসেই শট খেলেন। তবে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১৯ বলে করেন ২৭ রান।

একই পথে হেটেছেন তাওহীদ হৃদয়ও। দারুণ ব্যাটিং করা এই মিডল অর্ডার ব্যাটার সাজঘরে ফিরেছেন ফিফটি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে। তার ব্যাট থেকে আসে ২৪ বলে ৪৫ রান। বাকিরা আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করলেও এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং করার চেষ্টা করেন লিটন। ৩২ বলে ৪০ রান করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এ ছাড়া শেষদিকে দারুণ ক্যামিও খেলেছেন জাকের আলি। এই উইকেটকিপার ব্যাটারের ব্যাট থেকে ৬ বলে ১৮ রান এসেছে আর দলগতভাবে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০৫ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ২০৫/৫ (তানজিদ ৫৯, লিটন ৪০, নাজমুল ২৭, হৃদয় ৪৫, জাকের ১৮, শামীম ৬*, রিশাদ ২*; জাওয়াদউল্লা ৩/৪৫, সগীর ২/৩৬)।

আরব আমিরাত: ১৯.৫ ওভারে ২০৬/৮ (ওয়াসিম ৮২, জোহাইব ৩৮, আসিফ ১৯, আলিশান ১৩, হায়দার ১৫*; রিশাদ ২/২৮, শরীফুল ২/৩৪, নাহিদ ২/৫০, তানভীর ১/৩৭, তানজিম ১/৫৫)।

ফল: আরব আমিরাত ২ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মুহাম্মদ ওয়াসিম।

সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ১–১–এ সমতা।

Loading


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ