এনডিটিভি জানায়, পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সেক্টরে কৃষকদের নিরাপত্তা দিতে গিয়ে সাহু আন্তর্জাতিক সীমান্ত ভুল করে অতিক্রম করেন। গাছের নিচে বিশ্রাম নেওয়ার সময় পাকিস্তান রেঞ্জাররা তাকে ধরে নিয়ে যায়। বিএসএফের ১৮২তম ব্যাটালিয়নের ‘কিষাণ গার্ড’ ইউনিটে যুক্ত ছিলেন সাহু। যাদের কাজ হলো সীমান্তের কাছাকাছি জমিতে কাজ করা কৃষকদের সুরক্ষা দেওয়া।
এদিকে রাজস্থানে আটক হওয়া পাকিস্তানি রেঞ্জারের পরিচয় এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তিনি বর্তমানে বিএসএফের রাজস্থান সীমান্ত অঞ্চলের হেফাজতে রয়েছেন।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এমন অনিচ্ছাকৃত সীমান্ত অতিক্রমের ক্ষেত্রে সাধারণত একটি প্রতিষ্ঠিত প্রক্রিয়া রয়েছে। যার মাধ্যমে উভয় পক্ষই দ্রুত জওয়ানদের ফিরিয়ে দেয়। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। একাধিক বৈঠক হলেও পাকিস্তান এখনো সাহুকে ফেরত দেওয়ার বিষয়ে কোনো স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দেয়নি বা তার অবস্থান নিশ্চিত করেনি।
এদিকে, শনিবার (৩ মে) দিবাগত রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ফের নিয়ন্ত্রণরেখার (এলওসি) বিভিন্ন সেক্টরে বিনা উসকানিতে গুলি চালায়। টানা ১০ম দিনের মতো কুপওয়ারা, বারামুলা, পুঞ্চ, রাজৌরি, মেন্ধর, নওশেরা, সুন্দরবনি ও আখনুর অঞ্চলে গুলির ঘটনা ঘটে। ভারতীয় সেনা যথাযথভাবে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানায়। এ পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পাহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর সীমান্তে এই উত্তেজনা শুরু হয়। ওই ঘটনায় নিহতদের অধিকাংশই পর্যটক। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে। ভারতের দাবি, পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বার সঙ্গে যুক্ত একটি গোষ্ঠী এই হামলা চালিয়েছে।
পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন শনিবার পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ‘আবদালি’ নামের একটি ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করে। ভারতের মতে, এটি একটি ‘প্রকাশ্য উস্কানিমূলক পদক্ষেপ’। ৪৫০ কিলোমিটার পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানের ‘এক্সারসাইজ সিন্ধু’-এর অংশ হিসেবে পরীক্ষা করা হয়েছে।
এই উত্তেজনার জেরে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক প্রতিক্রিয়ামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত, অটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ, কূটনৈতিক কর্মীদের প্রত্যাহার, পাকিস্তান থেকে আমদানি নিষিদ্ধকরণ, ডাকযোগ এবং বন্দর সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া।
এই পরিস্থিতিতে এখন নজর রয়েছে ভারত কী সিদ্ধান্ত নেয়—পাকিস্তানি রেঞ্জারকে ফিরিয়ে দেবে, নাকি সাহুর মুক্তি পর্যন্ত আটকে রাখবে।