• রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০৭ পূর্বাহ্ন

যাদেরকে ‘ভিভিআইপি’ ঘোষণা করা হয়, তারা যেসব সুবিধা পান

admin
আপডেটঃ : বুধবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর কাউকে ‘ভিভিআইপি’ ঘোষণা করলে কী হয়, তিনি কী কী সুবিধা পান, তা নিয়ে অনেকের মধ্যে কৌতূহল দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে খালেদা জিয়াকে ভিভিআইপি ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়।

পরে যমুনার সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত জানান পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

এরপর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) নিরাপত্তা দেওয়া শুরু করে। বেলা ২টা ২০ মিনিটের দিকে এসএসএফ সদস্যরা খালেদা জিয়াকে নিরাপত্তা দেওয়া শুরু করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।

সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সাবেক রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা করে দোয়া ও প্রার্থনা করা হয়। জাতির কাছে তার জন্য দোয়া ও প্রার্থনার আহ্বান জানানো হয়।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, সভায় খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় হাসপাতালে তাঁর নির্বিঘ্ন চিকিৎসা, প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা, তার নিরাপত্তা ও যাতায়াতের সুবিধা এবং উচ্চ মর্যাদা বিবেচনায় তাঁকে রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকরের জন্য সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এই বিষয়ে খালেদা জিয়ার পরিবার ও দল অবগত রয়েছে বলেও জানান পরিকল্পনা উপদেষ্টা।

গুরুতর অসুস্থ হয়ে গত ২৩ নভেম্বর থেকে হাসপাতালে শয্যাশায়ী খালেদা জিয়া। তার শারীরিক অবস্থার হঠাৎ অবনতি হওয়ায় তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করে চিকিৎসা দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) (সংশোধন) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা ক্ষেত্রমত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, তাঁদের দৈহিক নিরাপত্তা দেওয়া এ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হবে। এ ছাড়া বাহিনী বাংলাদেশে অবস্থানরত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও নিরাপত্তা দেবে।

সরকার চাইলে কোনো বিশেষ ব্যক্তিকে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ হিসেবে ঘোষণা করতে পারে। বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা ক্ষেত্রমতে তল্লাশী, গ্রেপ্তার ও আটকের ক্ষেত্রে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) ক্ষমতা ভোগ করেন।

আইনে বলা আছে, দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে তিনি সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন। ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’র নিরাপত্তার প্রয়োজনে গুলিবর্ষণ করা দরকার হলে তা করতে পারবেন।

সাধারণত বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান বা অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বাংলাদেশে সফরে এলেও এ ধরনের নিরাপত্তা দেওয়া হয়। যেমন গত মার্চে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশে আসার পর তাকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল সরকার। তখন তার নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিল এসএসএফ। সর্বশেষ গত মাসে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে ঢাকা সফর করেন। এ সময় তাঁকে নিরাপত্তা দেওয়া হয় এসএসএফের মাধ্যমে।

এর আগে ২০০৮ সালে জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং আওয়ামী লীগের (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) সভাপতি শেখ হাসিনাকে কিছু সময়ের জন্য ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করা হয়েছিল।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ‘জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা আইন, ২০০৯’ জারি করা হয়েছিল। অবশ্য ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দায়িত্ব নেওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকার জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৪ জারি করে। এর ফলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্যরা বিশেষ নিরাপত্তার সুবিধা পাবেন না।

Loading


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ