নিউজ ডেস্কঃ সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল বলেছেন, গত দুই-তিন দিন ধরে ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে আলোচনা ছড়িয়ে পড়েছে। তার বক্তব্য অনুসারে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা- বিশেষত ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন দফতরের উপদেষ্টা চক্র, ভবিষ্যতে ক্ষমতা বদল হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন এবং এমন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন যাতে তারা নিরাপদভাবে দেশ ছাড়তে পারেন। এজন্য তারা সম্ভাব্য ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলে ধারণা প্রকাশ করেন তিনি।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) নিজের ইউটিউব চ্যানেলে তিনি এসব কথা বলেন।
মাসুদ কামাল আরও বলেন, এই রকম ‘সেফ এক্সিট’ নতুন নয়; ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও এমনই দেখা গেছে। তিনি উদাহরণ হিসেবে বললেন, তৎকালীন প্রধান ড. ফখরুদ্দীন আহমদ দায়িত্ব শেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন এবং তখনকার সরকার তাদের জন্য নিরাপদ ব্যবস্থা করেছিল। এখনকার উপদেষ্টাদেরও একই রকম ব্যবস্থা চাইছে কি না, এ প্রশ্ন উঠেছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, রাজনৈতিক বিশ্লেষক নাহিদ ইসলাম ভেতরের সংকট নিয়ে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন, অনেক উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছেন এবং নিজের ভবিষ্যৎ–‘সেফ এক্সিট’ নিশ্চিত করতে ব্যস্ত। নাহিদের কথায়, অতিরিক্ত ভাবে দল ও উপদেষ্টাদের উপর আস্থা রেখাই ভুল ছিল; ছাত্র নেতৃত্বকে শক্তিশালী করা উচিত ছিল।
মাসুদ কামাল ব্যক্তিভাবে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে ঘিরে অভিযোগ তুলেন, বিসিবি নির্বাচনে সরাসরি হস্তক্ষেপ, নিজ এলাকায় অস্বাভাবিক উন্নয়ন বরাদ্দ নেওয়া ইত্যাদি। তিনি উল্লেখ করেন, এই ধরনের আচরণই দেখায় যে অনেক উপদেষ্টার ভবিষ্যতে ‘সেফ এক্সিট’ প্রয়োজন হবে; কারণ নির্বাচন হারলে তারা সঙ্কটাপন্ন হবেন এবং আগে থেকেই নিরাপত্তার পথ খোঁজার চেষ্টা করবেন।
বিএনপির রুমিন ফারহানা বলেন, অনেক উপদেষ্টা দ্বৈত নাগরিকত্বের কারণে সহজেই দেশের বাইরে চলে যেতে পারবেন; তাই তাদের ‘সেফ এক্সিট’ খুব কষ্ট করে খুঁজতে হবে না।
গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, এনজিও উপদেষ্টাদের শপথ নেওয়ার পর থেকে গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হওয়ার পথ খোলা হয়েছে; যদি অভ্যুত্থান ব্যর্থ হলে দায়ভার নিতে হবে।
মাসুদ কামাল অনুরোধ করেন, দুর্নীতিগ্রস্ত ও অযোগ্য মানুষদের দ্বারা দেশ সংস্কার সম্ভব নয়; এমন লোকদের দায়িত্ব থেকে সরানো ও দোষীদের নাগরিকসম্মুখে আনা উচিত। তিনি প্রস্তাব দেন, সরকার মেয়াদ শেষ হওয়ার অন্তত ১৫ দিন আগে উপদেষ্টাদের পাসপোর্ট জব্দ করে তদন্ত শুরু করা উচিত, যারা নির্দোষ তাদের মুক্তি দিতে হবে, এবং অপরাধী হলে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
![]()