★ নিউজ ডেস্কঃ ‘আমি এখনো বাংলাদেশের হয়ে খেলতে চাই, আর এই ইচ্ছা সব সময়ই থাকবে। আমি এখনো বাংলাদেশের হয়ে খেলে ভালোভাবে ক্যারিয়ার শেষ করতে চাই।’ সম্প্রতি একটি ইংরেজি দৈনিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিশ্ব ক্রিকেট তথা বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান।
পতিত স্বৈরাচারী শাসক দলের সংসদ সদস্য হয়ে নিজের ক্যারিয়ারকে হুমকির মুখে ফেলেন এই অলরাউন্ডার। গত বছর আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সাকিব আল হাসান আর দেশে ফিরতে পারেননি। খেলতে পারেননি আর বাংলাদেশ দলের হয়েও। অনেকেই সাকিবের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি দেখছেন। কিন্তু সাকিবের ভাবনা অন্য রকম। তিনি এখনো বাংলাদেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন মনে পুষে রেখেছেন। বাংলাদেশের হয়ে খেলেই অবসর নিতে চান এই ক্রিকেটার।
সাক্ষাৎকারে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি কখন টের পেলেন বাংলাদেশের হয়ে খেলার সুযোগ আর নেই? সাকিবের উত্তর, ‘যখন বুঝলাম এত চাপ নিয়ে খেলতে পারব না, তখনই মনে হয়েছে শেষ। ব্যাপারটা এমন নয় যে আমি আমার দেশের হয়ে খেলতে চাই না—আমি এখনো বাংলাদেশের হয়ে খেলতে চাই, আর এই ইচ্ছা সব সময়ই থাকবে। এ নিয়ে বিসিবি সভাপতি থেকে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা—সবার সঙ্গেই যোগাযোগ করেছি।’
সাকিব বাংলাদেশের হয়ে সর্বশেষ খেলেছেন গত বছর সেপ্টেম্বরে ভারতের বিপক্ষে কানপুর টেস্টে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের সেই ভারত সফরে তিনি জানিয়েছিলেন, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি আর খেলবেন না। পাশাপাশি অক্টোবরে মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেট ছাড়ারও ঘোষণা দেন এবং ওয়ানডেতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত খেলার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন সাকিব।
কিন্তু রাজনৈতিক কারণে একটি ইচ্ছাও পূরণ হয়নি বিগত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সাকিবের। তখন সাকিবকে জানানো হয়েছিল, নিরাপত্তাঝুঁকির কারণে তিনি দেশে না এলেই ভালো হবে। তাই সাকিবও আসেননি।
সাক্ষাৎকারে সাকিব বলেছেন, ‘হ্যাঁ, আমি সংসদ সদস্য ছিলাম কিন্তু এখন তো আর নেই এবং কোনো দলে কোনো রাজনৈতিক পদও নেই। যে কাজটি আমি ১৮ থেকে ২০ বছর (বাংলাদেশের হয়ে খেলা) ধরে করছি, সেটা থামিয়ে দেওয়াটা কি আপত্তিকর নয়? আমি এখনো বাংলাদেশের হয়ে খেলে ভালোভাবে ক্যারিয়ার শেষ করতে চাই। যদি সুযোগ থাকে আমি এক সিরিজ, দুই সিরিজ নাকি আরও এক বছর খেলবো, সেই পরিকল্পনা করতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘দেশের হয়ে খেলাই আমার সবচেয়ে বড় ইচ্ছা এবং সে জন্য আমি নিজের সবকিছু দিয়ে দিতে রাজি। এটাই আমার স্বপ্ন এবং সেটা পূরণ করতে আমি সবকিছুই করছি—ক্রীড়া উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টা এবং বিসিবি সভাপতির সঙ্গে কথা বলছি।’
দেশে ফেরার বিষয়ে বিসিবি সাহায্য করতে পারেনি বলে সাকিবের কোনো অভিযোগ নেই। এ নিয়ে সাক্ষাৎকারে সাকিব বলেছেন, ‘সবারই সীমাবদ্ধতা আছে।’ বাংলাদেশের হয়ে ১৯ বছর ক্রিকেট খেলা সাকিব আরও বলেছেন, ‘গত ১৮ বছর নাকি সর্বশেষ ৬ মাস, কোনটা দেখে আমাকে বিচার করবেন, তা আপনাদের ইচ্ছা।’