• রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৫০ পূর্বাহ্ন

গণহত্যা মামলায় শেখ হাসিনা ও কামালকে মৃত্যুদণ্ড

admin
আপডেটঃ : সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫

জুলাই-আগস্ট ২০২৪-এ গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যা ও অন্যান্য মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

মানবতাবিরোধী অপরাধ সংক্রান্ত এই প্রথম মামলার রায় সোমবার দুপুরে ঘোষণা করা হয়।

দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে ছয় অধ্যায়ে সাজানো ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়ের প্রথম অংশ পড়া শুরু করেন বিচারিক প্যানেলের সদস্য বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে অন্য সদস্য ছিলেন বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ।

প্রায় ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট রায় পাঠ শেষে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে দুই আসামির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সাজা ঘোষণা করেন আদালত।

এ মামলায় শেখ হাসিনা ও কামাল পলাতক থাকলেও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় এক বছর ধরে কারাগারে আছেন। মামুন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হিসেবে বিস্তারিত জবানবন্দি দেওয়ায় প্রসিকিউশন তার শাস্তির সিদ্ধান্ত ট্রাইব্যুনালের ওপর ন্যস্ত করে।

আজ সকালে সকাল ৯টা ১০ মিনিটে কড়া নিরাপত্তায় কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে তাকে আদালতে আনা হয়। হাজতখানায় প্রবেশের সময় তাকে মাথা নিচু করে থাকতে দেখা যায়।

রায়কে কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্ট ও ট্রাইব্যুনাল এলাকায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়। পুলিশ, র‌্যাব, এপিবিএন, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন ছিল। গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও তৎপর ছিলেন।

রোববার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর দোয়েল চত্বর থেকে শিক্ষাভবনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং সীমিত করা হয় মানুষের চলাচল।

গত ১৩ নভেম্বর এ মামলার রায় ঘোষণার তারিখ ঠিক করেন চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদার। ২৮ কার্যদিবসে মোট ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। এরপর ৯ কার্যদিন ধরে প্রসিকিউশন এবং স্টেট ডিফেন্সের যুক্তিতর্ক ও পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করা হয়।

রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামানের সমাপনী বক্তব্য এবং চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেনের যুক্তি উপস্থাপনের পর রায়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। প্রসিকিউশন এ মামলায় শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ দণ্ড দাবি করে। তবে রাজসাক্ষী হওয়ায় আসামি মামুনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আদালতের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়।

মামুনের আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ অবশ্য তার খালাস চান, পাশাপাশি রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন শেখ হাসিনা ও কামালেরও খালাস প্রত্যাশা করেন।

মোট পাঁচটি অভিযোগে তিন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যা এবং আশুলিয়ায় লাশ পুড়িয়ে ফেলা। আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার তদন্ত বিবরণীর মধ্যে দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠা তথ্যসূত্র, চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠা জব্দকৃত নথি ও অন্যান্য দালিলিক প্রমাণ, এবং দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠা শহীদদের তালিকা অন্তর্ভুক্ত। মোট ৮৪ জনকে সাক্ষী করা হয়। গত ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন চিফ প্রসিকিউটরের কাছে জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

Loading


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ