• রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৫০ পূর্বাহ্ন

আ.লীগ নেতাকে নিয়ে জামায়াতের এমপি প্রার্থীর গণসংযোগ

admin
আপডেটঃ : রবিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্য (এমপি) পদপ্রার্থী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতিকে নিয়ে নির্বাচনী গণসংযোগ করেছেন। এ ঘটনায় স্থানীয় বিএনপি ও এনসিপির নেতাকর্মীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। শুরু হয়েছে নানা আলোচনা।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের দৌলতপুর এলাকায় চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনের জামায়াতের এমপি প্রার্থী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান চৌধুরী ওই বড়উঠান ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সায়েদ আল মাহমুদকে নিয়ে তার নির্বাচনী গণসংযোগ করেন। সন্ধ্যায় বিষয়টি জানাজানি হয় এবং গণসংযোগের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান চৌধুরী দক্ষিণ জেলা জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।

উপজেলা বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন, নিজেদের স্বার্থে পতিত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের নেতাদের ফেরাতে জামায়াত ইসলামী মাঠে নেমেছে। এনসিপি নেতাদের এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ নেতা সায়েদ আল মাহমুদকে গ্রেপ্তার করতে সম্প্রতি কর্ণফুলী থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় মাহমুদকে গ্রেপ্তার করতে গেলে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে গ্রেপ্তার আটকায় তার ভাতিজা স্থানীয় জামায়াত নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন।

স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, গত শুক্রবার জামায়াতের মনোনীত এমপি পদপ্রার্থী জামায়াত নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুনের ঘরে দুপুরের ভোজে অংশ নেন। এসবের আয়োজন করেন জামায়াত নেতা মামুনের চাচা সায়েদ আল মাহমুদ। মূলত সায়েদ আল মাহমুদকে গ্রেপ্তার থেকে রক্ষা করতে এবং জামায়াতের সাথে সম্পর্ক মজবুত করতে এই আয়োজন করেন তার ভাতিজা আব্দুল্লাহ আল মামুন।

এছাড়া জামায়াতের সংসদ সদস্য প্রার্থী স্থানীয় মসজিদে নামাজ পড়া শেষে আবদুল আউয়াল চৌধুরী পাড়া, কাজী বাড়ি সহ কয়েকটি পাড়াতে গণসংযোগ করেন বলেও নিশ্চিত করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে জুলাই আন্দোলনকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন কটূক্তিমূলক লেখা শেয়ার করা, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা থাকাকালীন সময়ে অবাধ ক্ষমতা চর্চার অভিযোগ রয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা সায়েদ আল মাহমুদের বিরুদ্ধে।

এবিষয়ে কর্ণফুলী উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক জাহেদুল ইসলাম শামীম বলেন, জুলাই আন্দোলন নিয়ে প্রকাশ্যে কটূক্তিকারী আওয়ামী লীগের সভাপতিকে নিয়ে জামাতের প্রার্থী কিভাবে গণসংযোগ করছেন? ক্ষমতার লোভে দীর্ঘদিনের রাজপথের সহযোগীদের এত অধঃপতন দেখাটা লজ্জাজনক।

কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ বলেন, জামায়াতে ইসলামী ভোটের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগকে প্রাসঙ্গিক করে তুলছে, কৌশলে তারা এই কাজ দীর্ঘদিন ধরে করে যাচ্ছে। এসব কাজ জুলাই চেতনার পরিপন্থি বুঝেও নিজেদের শক্তিমত্তা বৃদ্ধিতে তারা এসব কাজ করছে।

এই ঘটনায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কর্ণফুলী উপজেলা শাখার পক্ষ থেকে নিন্দা জানিয়ে যুগ্ম সমন্বয়কারী ইমরান হোসেন বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের পদধরী নেতার সঙ্গে জামায়াত প্রার্থীর এমন প্রকাশ্য সখ্যতা লজ্জাজনক ও রাজনৈতিক অনৈতিকতার চরম উদাহরণ। ছাত্রজনতার রক্ত ঘামে অর্জিত গণতন্ত্রকে এভাবে কলুষিত করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

এবিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াতে ইসলামী কর্ণফুলী শাখার আমীর মনির আবছার চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, স্থানীয় অনেকের সাথে মাহমুদও আমাদের সাথে এসেছিল। আমরা তো কাউকে আসতে নিষেধ করতে পারি না।

এ বিষয়ে বড়উঠান ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সায়েদ আল মাহমুদ বলেন, মসজিদে যাওয়ার সময় জামায়াতের সংসদ প্রার্থীর সাথে দেখা হয়। গণসংযোগ বা অন্যকিছুতে আমি ছিলাম না।

তবে এই ঘটনায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে গণসংযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেন চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনের এমপি প্রার্থী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান চৌধুরী। তিনি সমকালকে বলেন, বড়উঠান এলাকায় একটি মসজিদে নামাজ পড়াতে গিয়েছিলাম। নামাজ শেষে একজনের বাড়িতে দাওয়াত গ্রহণ করি। তখন স্থানীয়দের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ হয়। এটা নির্বাচনী গণসংযোগ ছিল না। ওই দআওয়ামী লীগ নেতাকেও চিনতাম না।

Loading


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ