• শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:১৭ অপরাহ্ন

পদত্যাগ করলেন আরেক নির্বাচন কমিশনার

admin
আপডেটঃ : শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন কমিশনের আরেক সদস্য ড. রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা পদত্যাগ করেছেন। আজ শনিবার দুপুর ২টার দিকে তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পরে পদত্যাগের বিষয়ে সমকালকে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি সাংবাদিকদের কিছু বলবো না, যা বলার লিখিতভাবে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি।’

এর আগে গতকাল শুক্রবার রাতে পদত্যাগ করেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার। জাকসু নির্বাচন চলাকালে আসা অভিযোগের সুরাহা না করে ভোট গণনা চালিয়ে যাওয়ায় প্রতিবাদ জানিয়ে পদত্যাগ করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি হলে অনুষ্ঠিত হয় জাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। ভোটের আগের দিন রাতে বাম সংগঠন ও ছাত্রদল প্যানেলের প্রার্থীরা ভোট গণনার মেশিন সরবরাহ প্রতিষ্ঠানের মালিক জামায়াত নেতা- এমন অভিযোগ তোলেন। নির্বাচন কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তখন মেশিনের পরিবর্তে হাতে ভোট গণনার সিদ্ধান্ত নেয়। ভোটের দিন বিকেল সাড়ে তিনটায় ছাত্রদল নির্বাচন বর্জন করে। পরে সন্ধ্যা সাতটায় বামসমর্থিত আরও চারটি প্যানেল ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়। আটটি প্যানেলের মধ্যে পাঁচটির ৬৮ জন প্রার্থী ভোট বর্জন করলেও বাকি তিন প্যানেলের ১১১ জন প্রার্থী নির্বাচনে নানা অভিযোগের মধ্যেও শেষ পর্যন্ত ভোটে রয়েছেন।

ছাত্রসংগঠনগুলোর পাল্টাপাল্টি অভিযোগের প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিভিন্ন হল থেকে ব্যালট বাক্স সিনেট ভবনে নেওয়া হয়। সব প্রস্তুতি শেষে রাত ১০টার পর শুরু হয় গণনা।

বৃহস্পতিবার ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার আধা ঘণ্টা আগে নানা অভিযোগ তুলে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক নজরুল ইসলামসহ ওই ফোরামের আরও দুই শিক্ষক অধ্যাপক শামীমা সুলতানা ও অধ্যাপক নাহরিন ইসলাম খান ভোট বর্জন করেন।

শুক্রবার সকালে নির্বাচন কমিশন অফিসে শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌসের মৃত্যুর পর পুরো ক্যাম্পাসে শোকের ছায়া নেমে আসে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে ভোট গণনায় ধীরগতির জন্য শিক্ষকরাজনীতি ও গ্রুপিং কাজ করেছে বলে প্রার্থী এবং শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন। দিনভর নানা ঘটনার পর বিকেলে প্রায় তিনঘণ্টা ভোট গণনা বন্ধ থাকে। পরে সন্ধ্যা সাতটায় হল সংসদের ভোট গণনা শেষে শুরু হয় কেন্দ্রীয় সংসদের ভোট গণনা।

জাকসু নির্বাচনে নানা অনিয়ম ও কমিশনের অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার। ছবি: সমকাল
জাকসু নির্বাচনে নানা অনিয়ম ও কমিশনের অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার।

তবে এর দুইঘণ্টা পর রাত ৯টার দিকে নির্বাচন কমিশনের সদস্য ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. মাফরুহী সাত্তার অনিয়মের অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‌‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলতে আমরা যা বুঝি, নির্বাচনে সেটি ছিল না। আমি যাতে পদত্যাগ না করি সেজন্য বৃহস্পতিবার থেকে আমার ওপর চাপ ছিল, তবুও আমি পদত্যাগ করছি।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে অনেকগুলো অনিয়ম দেখেছি। অনেকগুলো মারাত্মক ত্রুটি দেখেছি। এই ত্রুটিগুলো নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এ রকম পরিস্থিতিতে আমিসহ নির্বাচন কমিশনের সকলে একমত পোষণ করলেও বিশেষ কিছু কারণে আমার যে মতামত তা গ্রহণে তারা অপারগতা প্রকাশ করেন। নির্বাচন কমিশন আমার মতামতের সুরাহা না করেই ভোট গণনা শুরু করে। তখন আমি আমার যে মত তা লিখিতভাবে জানিয়েছি। সময় খুব কম হওয়ায় আমার পক্ষে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়। সে কারণে আমি নির্বাচন কমিশন থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিচ্ছি।’

Loading


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ